খুলনা, বাংলাদেশ | ২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ময়মনসিংহে বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মসজিদে ধাক্কা, বাবা-ছেলে নিহত
  চট্টগ্রামে কালুরঘাট সেতুতে ট্রেন-গাড়ি সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৩

চিতলমারীর মহসিন শেখ ব্যবসা ছেড়ে আম চাষে সফল

এস এস সাগর, চিতলমারী

জীবন-জীবীকার তাগিদে দশ বছর যাবত করেছেন মোবাইল ফোনের ব্যবসা। কিন্তু সেই ব্যবসায় ভাল করতে পারেননি। বছর তিনেক আগে অন্যের কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়ে শুরু করেন মাছের চাষ পাশাপাশি আমবাগান। সেই আম বাগানই এখন বাগেরহাটের চিতলমারি শিবপুর গ্রামের মো. মহসীন শেখের সফলতা।

মো. মহসিনের বাবার নাম আব্দুল মজিদ শেখ ও মা রেণু বেগমের। চার সন্তানের মধ্যে মহসিন সকলের ছোট। মহসিন ও তার স্ত্রী মরিয়ম বেগম দুইজনই শিক্ষিত। তাদের একমাত্র সন্তান ফারদিন দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে।

মো. মহসিন শেখ (৩৩) নামের তরুণ এই উদ্যোক্তা উপজেলার শিবপুর গ্রামের শেখ মুনছুর আলী লিটনের কাছ থেকে সাড়ে ৩ একর জমি চিংড়ি ঘের এবং ৩ একর জমিতে আমবাগান। আধুনিক জীবনযাপনে অভ্যস্থ মহসিনের শুরু হয় সংগ্রামী জীবন। আম বাগান বর্গা নেন। তিন বছর আগে শুরু করা মহসিন এখন ব্যবসা ছেড়ে আম চাষে সফল। তাঁর এ আম বাগান ইতোমধ্যে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান, চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস পাল, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সিফাত-আল-মারুফ ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আহমেদ ইকবালসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগন পরিদর্শন করেছেন।

মহসিনের বাগানে গোপাল ভোগ, গোবিন্দভোগ, হিম সাগর, হাড়িভাঙ্গা, থাইরডস্, ফজলি ও লতা জাতের ১৬০টি আমগাছ রয়েছে। বর্গা ভাগ হিসেবে বাগানের মালিককে ৩ ভাগের ১ ভাগ আম দিতে হয়। বাকি ২ ভাগ মহসিনের। তিনি গাছের পাকা আম ছাড়া কখনো বিক্রি করেন না। উৎপাদিত ফলে কোন প্রকার ক্ষতিকর রাসয়নিক ব্যবহার করেন না। প্রতিকেজি আম বিক্রি করেন ৮০ টাকায়। ফোন দিলে কুরিয়ারে সাথে আম সরবরাহ করেন। এ ভাবে আম বিক্রি করে মহসিন বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভ করেন। এছাড়া আম বাগানের মধ্যে মহসিন সাথীফসল হিসেবে সরিষা, মটরশুটি ও মরিচের চাষ করেন। তা বিক্রি করেও বেশ টাকা উপার্জন করেন। মহসিনের আম বাগানে ও মৎস্য ঘেরে হেদায়েত মোল্লা নামের এক ব্যাক্তি সারা বছর কাজ করেন। সাথে শ্রম দেন মহসিন নিজেই। আম চাষের পাশাপাশি ঘেরে মাছ, ঘেরের পাড়ে সবজি ও ঘেরের মধ্যে জমিতে ধান চাষও করেন মহসিন শেখ। তিন বছর আগে ব্যবসা ছেড়ে দিশেহারা মহসিন আজ সফল চাষি।

মো. মহসিন শেখ বলেন, ‘মোবাইল ফোনের ব্যবসা দেড়ে অনেক কষ্টে ছিলাম। এখন আম চাষ ও কৃষি কাজ করে খুব ভাল আছি। আগামী বছর আরও বেশী আম বিক্রি করতে পারবো। এখানে অনেক মানুষ দেখতে আসেন। আম নিয়ে যান, ফোন দিয়ে কুরিয়ার করতে বলেন।’

চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সিফাত-আল-মারুফ বলেন, ‘মহসিনের আম বাগানে ডিসি স্যার (জেলা প্রসাশক) ইউএনও স্যারসহ আমরা বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছি। কৃষি অফিস থেকে তাকে সার্বিক ভাবে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।’

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!